বাক্য—
আমরা
যে
কথা
বলি
অর্থাৎ
একে
অপরের
সঙ্গে
মনের
ভাব
বিনিময়
করা
হয়
যে
মাধ্যমের
দ্বারা
তাই
বাক্য
।
কয়েকটি
পদ
পাশাপাশি
বসে
যখন
মনের
সম্পূর্ণভাব
প্রকাশ
করে
তখন
তাকে
বাক্য
বলে
।
তবে
মনে
রাখতে
হবে
প্রত্যেকটি
পূর্নাঙ্গ
বাক্যে
একাধিক
অসমাপিকা
ক্রিয়া
থাকতে
পারে
কিন্তু
সমাপিকা
ক্রিয়াপদ
একটি
থাকতেই
হবে
।
সমাপিকা
ক্রিয়াই
বাক্য
সম্পূর্ণ
করে
।
যেমন—
'ছেলেরা
স্কুল
থেকে
বাড়ি
ফিরে
হাত
মুখ
ধুয়ে
খাবার
খেয়ে
পড়তে
বসে
।'
এই
বাক্যে
'ফিরে',
'ধুয়ে',
'খেয়ে',
'পড়তে',
চারটি
অসমাপিকা
ক্রিয়া
রয়েছে
কিন্তু
সমাপিকা
ক্রিয়া
একটি
তা
হল
'বসে'
।
আর একটি পূর্ণ বাক্যে থাকে তিনটি গুণ তা হল (১) যোগ্যতা (২) আকাঙ্ক্ষা (৩) আসত্তি বা নৈকট্য ।
(১) যোগ্যতা— একাধিক
পদ
পাশাপাশি
বসলেই
কিন্তু
বাক্য
হয়
না
।
যেমন
—'সূর্য
পূর্ব
দিকে
অস্ত
যায়'
।
গঠনগত
দিক
থেকে
সঠিক
হলেও
বাস্তবে
এর
অর্থ
ঠিক
হয়
না
।
সূর্য
পূর্ব
দিকে
উদিত
হয়
এবং
পশ্চিম
দিকে
অস্ত
যায়
এটাই
ঠিক
।
সুতরাং
বাক্যে
ব্যবহৃত
পদ
সমষ্টির
অর্থগত
সামঞ্জস্যকেই
বলে
যোগ্যতা
।
(২) আসত্তি বা নৈকট্য— বাক্যের
বিভিন্ন
অংশকে
উপযুক্ত
স্থানে
বসানোই
হল
আসত্তি
।
যেমন—
'তৈরি
নিজেরাই
কালি
ও
আমরা
করতাম
।'
বাক্যটি
পড়ে
কোন
অর্থই
বোধগম্য
হল
না
।
এলোমেলো
ভাবে
পদগুলি
সাজিয়ে
লিখলেই
বাক্য
হয়
না
।
পদগুলি
সঠিক
সঠিক
স্থানে
বসালেই
অর্থ
পরিষ্কার
বোধগম্য
হবে
।
আমরা
কালিও
তৈরি
করতাম
নিজেরাই
।
একেই
বলে
আসত্তি
।
(৩) আকাঙ্ক্ষা— আকাঙ্ক্ষা
কথার
অর্থ
হল
চাহিদা
।
বাক্যের
কিছুটা
অংশ
প্রকাশ
হওয়ার
পর
যদি
পরের
অংশটুকুর
জন্য
কোনো
আগ্রহ
তৈরি
হয়,
তখন
তাকে
বলা
হয়
আকাঙ্ক্ষা
।
যেমন—
'আমি
আগামীকাল
বাড়ি'
—বলতে
বাক্যটা
স্পষ্ট
নয়
কারণ
এরপরে
কি
আছে
তা
শোনার
আগ্রহ
থেকে
যায়
।
আমি
আগামীকাল
বাড়ি
যাব
বলতে
বাক্যটা
সম্পূর্ণ
হবে
বা
অর্থ
স্পষ্ট
হবে
।
এটাই
আকাঙ্ক্ষা
।
বাক্যের
উদ্দেশ্য
ও
বিধেয়
ভূমিকা—
প্রতিটি
বাক্যের
দুটি
অংশ—
উদ্দেশ্য
ও
বিধেয়
।
বাক্যে
যার
সম্পর্কে
কিছু
বলা
হয়
সেটা
উদ্দেশ্য
।
আর
উদ্দেশ্য
সম্পর্কে
যা
বলা
হয়
সেটাই
বিধেয়
।
যেমন—
রমা
ভালো
গান
গায়
।
'রমা'
হল
উদ্দেশ্য
এবং
'ভালো
গান
গায়'
হল
বিধেয়
।
উদ্দেশ্য
ও
বিধেয়ের
সম্প্রসারক
আছে
।
অর্থাৎ
বিধেয়
ও
উদ্দেশ্যকে
সম্প্রসারিত
করে
যে
তাকে
সম্প্রসারক
বলে
।
উদ্দেশ্যের সম্প্রসারক
:- 'বিশ্বকবি
রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর
১৯১৩
খ্রিস্টাব্দে
নোবেল
পুরস্কার
পেয়েছিলেন
গীতাঞ্জলি
কাব্যের
জন্য
।'
বাক্যটিতে
মূল
উদ্দেশ্য
হল
'রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর'
আর
উদ্দেশ্যের
সম্প্রসারক
হল
'বিশ্বকবি'
।
মূল
বিধেয়
হল
'পেয়েছিলেন'
।
আর
এই
বিধেয়ের
সম্প্রসারক
হল
— '১৯১৩
সালে
গীতাঞ্জলির
জন্য
নোবেল
পুরস্কার
।'
বাক্যের শ্রেণীবিভাগ
:- বাক্যের
শ্রেণীবিভাগ
দুই
প্রকার
—
(১) গঠনগত শ্রেণীবিভাগ
(২) অর্থগত শ্রেণীবিভাগ ।
(১) গঠনগত শ্রেণীবিভাগ :-
এখানে
বাক্যকে
চার
শ্রেণীতে
ভাগ
করা
হয়েছে
— (ক)
সরল
বাক্য,
(খ)
যৌগিক
বাক্য,
(গ)
জটিল
বাক্য
ও
(ঘ)
মিশ্র
বাক্য
।
(ক) সরল বাক্য
:- যে
বাক্যে
একটি
সমাপিকা
ক্রিয়া
থাকে
তাকে
সরল
বাক্য
বলে
।
যেমন—
সর্বহারা
কাব্যের
কবি
হলেন
কাজী
নজরুল
ইসলাম
।
ছেলেরা
মাঠে
খেলছে
।
সন্ধ্যায়
তারা
বাড়ি
ফিরে
হাতমুখ
ধুয়ে
পড়তে
বসবে
।
এখানে
'হলেন'
'খেলছে'
'বসবে'
হল
প্রত্যেকটি
বাক্যের
এক
একটি
সমাপিকা
ক্রিয়া
।
(খ) যৌগিক বাক্য :- যে
বাক্যে
দুটি
সরল
বাক্য
একটি
সংযোজক
অব্যয়
দ্বারা
যুক্ত
হয়,
তাকে
যৌগিক
বাক্য
বলে
।
যেমন
— তারা
গরীব
কিন্তু
তারা
চোর
নয়
।
রমা
ও
শ্যামা
আগামীকাল
আসবে
।
তোমার
দোষ
স্বীকার
করো
অথবা
শাস্তি
পাও
।
এখানে
'কিন্তু'
'ও'
'অথবা'
অব্যয়্গুলি
দুটি
করে
সরল
বাক্যকে
যুক্ত
করেছে
।
(গ) জটিল বাক্য
:- যে
বাক্যে
একাধিক
খন্ড
বাক্য
থাকলেও
তার
মধ্যে
একটি
প্রধান
খন্ড
বাক্য
থাকে
এবং
এক
বা
একাধিক
অপ্রধান
খন্ড
বাক্য
থাকে
তাকে
জটিল
বাক্য
বলে
।
যেমন
— (i) যদি
পরিশ্রম
না
কর
তাহলে
পরীক্ষায়
ফেল
করবে
।
(ii) যখন
বৃষ্টি
হচ্ছিল
তখন
আমি
বই
পড়ছিলাম
।
(iii) তপন
যে
গল্পটি
লিখেছিল
তা
পত্রিকায়
ছাপা
হয়েছে
।
(ঘ) মিশ্র বাক্য:- সরল,
জটিল
ও
যৌগিক
বাক্যের
মিলনে
এক
ধরনের
বাক্য
তৈরি
হয়
তাকে
মিশ্র
বাক্য
বলে
।
যেমন—
যদি
তুমি
দেশের
জন্য
আত্মত্যাগ
করো
তবে
দেখবে
দেশের
মানুষ
তোমায়
শুধু
নেতা
বলে
মানবে
না
তোমায়
আজীবন
মাথায়
করে
তুলে
রাখবে
।
(২) অর্থগত শ্রেণীবিভাগ
:- এখানে
বাক্যকে
সাতটি
শ্রেণীতে
ভাগ
করা
হয়েছে
— (ক)
নির্দেশক
বাক্য,
(খ)
প্রশ্ন
বাচক
বাক্য,
(গ)
অনুজ্ঞাসূচক
বাক্য,
(ঘ)
প্রার্থনা
সূচক
বাক্য,
(ঙ)
আবেগসূচক
বাক্য,
(চ)
সন্দেহ
বাচক
বাক্য
ও
(ছ)
শর্তসাপেক্ষ
বাক্য
।
(ক) নির্দেশক বাক্য:-
যে
বাক্যে
কোন
বক্তব্য,
তথ্য
বা
বিবৃতি
প্রকাশ
করা
হয়
তাকে
নির্দেশক
বাক্য
বলে
।
যেমন—
এবছর
বেশি
বৃষ্টি
হয়নি
।
আমাদের
একটি
বড়
বাগান
আছে
।
নির্দেশক
বাক্য
আবার
দুই
রকমের—
(i) ইতিবাচক
বাক্য
বা
অস্তর্থক
বা
হ্যাঁ
বাচক
ও
(ii) নেতিবাচক
বা
নঞর্থক
বা
না
বাচক
।
(i) ইতিবাচক বাক্য
বা অস্তর্থক বা
হ্যাঁ বাচক —যে
বাক্যের
অর্থকে
স্বীকৃতি
দেয়া
হয়
তাকে
ইতিবাচক
বাক্য
বা
অস্তর্থক
বা
হ্যাঁ
বাচক
বাক্য
বলে
।
যেমন
ছাত্রীরা
রোজ
বাংলা
ক্লাস
করে
।
আমি
গান
শুনতে
ভালবাসি
।
(ii) নেতিবাচক বা
নঞর্থক বা
না বাচক
বাক্য
— যে
বাক্যের
অর্থ
না
বাচক
অর্থাৎ
নেতিবাচক,
তখন
তাকে
নঞর্থক
বাক্য
বলে
।
(খ) প্রশ্নসূচক বাক্য
:- যে
বাক্যে
কোন
জিজ্ঞাসা
থাকে
বা
প্রশ্ন
করা
হয়,
তখন
তাকে
প্রশ্ন
বাচক
বাক্য
বলে
।
যেমন—
তোমার
নাম
কী
? তুমি
কখন
বাড়ি
যাবে
?
(গ) অনুজ্ঞাসূচক বাক্য :-
যে
বাক্যে
আদেশ,
উপদেশ,
অনুরোধ
ইত্যাদি
প্রকাশ
করা
হয়
সেই
বাক্যকে
অনুজ্ঞাবাচক
বাক্য
বলে
।
যেমন—
এখানে
এস
।
পড়াশুনায়
মনোযোগ
দাও
।
১০
মিনিটের
মধ্যে
লিখে
দাও
।
(ঘ) প্রার্থনা সূচক বাক্য:-
যে
বাক্যে
মনের
ইচ্ছা,
আকাঙ্ক্ষা
প্রার্থনা
প্রকাশ
পায়
তাকে
প্রার্থনা
সূচক
বাক্য
বলে
।
যেমন—
ঈশ্বর
তোমার
মঙ্গল
করুন
।
তুমি
জীবনে
সুখী
হও
ইত্যাদি
।
(ঙ) আবেগসূচক বাক্য
:- যে
বাক্যে
আবেগ,
আনন্দ,
উচ্ছ্বাস,
রাগ,
দুঃখ,
ঘৃণা,
ভয়
ইত্যাদি
প্রকাশ
পায়
সেই
বাক্যকে
আবেগসূচক
বাক্য
বলে
।
যেমন—
হায়
হায়
! আমার
কি
সর্বনাশ
হয়ে
গেল
! বাঃ,
কি
সুন্দর
পাখি
!
(চ) সন্দেহ বাচক বাক্য:- যে
বাক্যে
বক্তার
মনে
কোনোও
সন্দেহ,
সংশয়
বা
অনুমান
প্রকাশ
পায়
তাকে
সন্দেহ
বাচক
বাক্য
বলে
।
যেমন—
তোরা
বুঝি
এ
বাড়ি
ছেড়ে
যাচ্ছিস
? আমি
হয়তো
কাল
নাও
যেতে
পারি
।
(ছ) শর্তসাপেক্ষ বাক্য:- যে
বাক্যে
বর্ণিত
একটি
ঘটনা
বা
অবস্থার
উপর
অন্য
কোনো
একটি
ঘটনা
বা
অবস্থা
নির্ভর
করে
তাকেই
বলা
হয়
শর্তসাপেক্ষ
বাক্য
।
যেমন—
যদি
বৃষ্টি
হয়
তাহলে
আমরা
যাব
না
।
যদি
মন
দিয়ে
পড়
তাহলে
পরীক্ষায়
পাস
করবে
।
0 Comments
If you have any doubts, Please let me know.